Hadith
সহিহ বুখারী
অধ্যায়ঃ৩/১.
ইল্মের ফযীলাত
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ “তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার আল্লাহ তা‘আলা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন এবং তাদেরকেও (বাড়িয়ে দিবেন) যাদেরকে ইল্ম দেয়া হয়েছে। আর আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে পূর্ণ অবগত আছেন”-(সূরা আল-মুজাদালাহ্ ৫৮/১১)।
মহান আল্লাহর বাণীঃ رَبِّ زِدْنِيْ عِلْمًا “হে আমার প্রতিপালক! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও।” (সূরা তোয়াহা ২০/১১৪)
অধ্যায়ঃ ৩/১০.
বলা ও করার পূর্বে জ্ঞান আবশ্যক
মহা মহিমান্বিত আল্লাহ বলেন : فَاعْلَمْ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ “সুতরাং জেনে রাখ, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই।” (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭/১৯)।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ قَال أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ{رواه الترمذي
আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইলম (জ্ঞান) অর্জন করার উদ্দেশ্যে পথ চলবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সুগম করে দিবেন। (তিরমিযী হা/২৬৪৬; ইখনু মাজাহ হা/২২৩; সহিহুল জামে‘ হা/৬২৯৮, সনদ সহিহ।)
এখানে আল্লাহ তা’আলা ইলমের কথা আগে বলেছেন। আলিমগণই নবীগণের ওয়ারিস। তারা ইলমের ওয়ারিস হয়েছেন। তাই যে ইলম হাসিল করে সে বিরাট অংশ লাভ করে। আর যে ব্যক্তি ইলম হাসিলের উদ্দেশ্যে পথ চলে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন।
আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ
إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ
আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলিমগণই তাকে ভয় করে (সূরা ফাতির ৩৫/২৮)।
আল্লাহ তা’আলা আর ইরশাদ করেনঃ
وَمَا يَعْقِلُهَا إِلاَّ الْعَالِمُونَ “আলিমগণ ছাড়া তা কেউ বুঝেনা”। (সূরা আল-‘আনকাবুত ২৯/৩৪)
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছেঃ
وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ তারা বলবে, যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম, তাহলে আমরা জাহান্নামী হতাম না। (সূরা মুল্ক ৬৭/১০)
অন্যত্র তিনি বলেনঃ
هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لاَ يَعْلَمُونَ “বল, যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে? (সূরা যুমার ৩৯/৯)
নবী কারিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ যার কল্যাণ চান তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন। অধ্যায়নের মাধ্যমেই জ্ঞান অর্জিত হয়। আবু যার (রাঃ) তাঁর ঘাড়ের দিকে ইশারা করে বলেন, যদি তোমরা এখানে তরবারি ধর, এরপর আমি বুঝতে পারি যে, তোমরা আমার ওপর সে তরবারী চালাবার আগে আমি একটু কথা বলতে পারব, তবে আমি যা নবী কারিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি, অবশ্যই তা বলে ফেলব।
নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণীঃ উপস্থিত ব্যক্তিরা যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে (আমার বানী) পৌঁছে দেয়। ইব্নু আব্বাস (রাঃ) বলেন, كُونُوا رَبَّانِيِّينَ (তোমরা রব্বানি হও)। এখানে رَبَّانِيِّينَ মানে প্রজ্ঞাবান, আলিম ও ফকীহগণ। আরো বলা হয় رباني সে ব্যক্তি কে বলা হয় যিনি মানুষকে জ্ঞানের বড় বড় বিষয়ের পূর্বে ছোট ছোট বিষয় শিক্ষা দিয়ে গড়ে তোলেন।
হাদিসের শিক্ষা :
- ‘ইলম (জ্ঞান) অর্জন করার সম্মান ও মর্যাদা অত্যধিক।
- ‘ইলম (জ্ঞান) অর্জনের উদ্দেশ্যে যে পথ চলবে আল্লাহ তার জান্নাতের পথ সুগম ও সহজ করে দেবেন।
- ‘ইলম অনুযায়ী আমল তথা কাজ হতে হবে।
- ‘ইলম প্রচার করতে হবে।